পিলখানায় এলেই মনটা ভারী হয়ে যায়: প্রধানমন্ত্রী

Passenger Voice    |    ০৩:১৭ পিএম, ২০২৪-০৩-০৪


পিলখানায় এলেই মনটা ভারী হয়ে যায়: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পিলখানায় গেলেই তাঁর মন ভারী হয়ে যায়। ২০০৯ সালে পিলখানায় সংঘটিত ভয়াবহ ঘটনার কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। আজ সোমবার সকাল ১০টায় পিলখানায় বিজিবি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে বীরত্ব ও কৃতিত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ বিজিবির ৭২ সদস্যকে পদক পরিয়ে দেন তিনি। 

অনুষ্ঠানের শুরুতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) দিবস-২০২৩-এর আনুষ্ঠানিক কুচকাওয়াজে বিজিবি সদর দপ্তরের বীরউত্তম আনোয়ার হোসেন প্যারেড গ্রাউন্ডে প্রধান অতিথি হিসেবে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বিজিবিতে বীরত্বপূর্ণ ও কৃতিত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ বিজিবি সদস্যদের পদক পরিয়ে দেন। 

প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘বর্তমান সরকার বিজিবি সৈনিকদের জীবনমান উন্নয়নে নানামুখী কল্যাণমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। নতুন র‍্যাংক-ব্যাজ প্রবর্তন, যোগ্যতার ভিত্তিতে পদোন্নতি, সীমান্ত ভাতা প্রদান, জুনিয়র কর্মকর্তা ও হাবিলদার পদবির সদস্যদের বেতন স্কেল উচ্চ ধাপে উন্নীতকরণ, অগ্রিম বেতনসহ বাৎসরিক ২ মাসের ছুটি প্রদান, পারিবারিক রেশন ও ৩ বছরের নিচে সন্তানদের পূর্ণ স্কেল রেশন প্রদানসহ বিজিবি সদস্যের প্রতিবন্ধী সন্তানদের অবসরের পূর্ব পর্যন্ত নগদ মূল্যে রেশন প্রদান করা হচ্ছে।’ 

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘দুর্গম প্রত্যন্ত ও পার্বত্য অঞ্চলের জনবিচ্ছিন্ন ৫০টি বিওপিতে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটনির্ভর ভি-স্যাট প্রযুক্তি স্থাপন করে আইপি টেলিফোনের মাধ্যমে বিওপি হতে বিজিবি সদর দপ্তর ও অন্যান্য স্থানে যোগাযোগসহ বিজিবি সদস্যরা তাঁদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতে সক্ষম হচ্ছেন।’ 

শেখ হাসিনা বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের ফলে বাংলাদেশ সীমান্তের নিকটবর্তী এলাকায় সশস্ত্র সংঘাত হয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এই সংঘাতের ফলে বিজিবির সদস্যগণও অত্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে ছিল। তবুও বিজিবি সদস্যগণ একটি বুলেটও ফায়ার না করে অত্যন্ত ধৈর্য ও পেশাদারত্বের সঙ্গে সকল পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছে। এ সময় সহনশীলতা ও পেশাদারত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করায় বিজিবিকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান তিনি। 

সীমান্ত সুরক্ষা, চোরাচালান রোধ, মাদক ও নারী-শিশু পাচার রোধসহ বিভিন্ন আন্তসীমান্ত অপরাধ দমন, সীমান্তবর্তী জনসাধারণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানে বিজিবির দক্ষতা ও পেশাদারত্বের ভূয়সী প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সীমান্তে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি দেশের অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন, যেকোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলা, দেশ গঠন ও জনকল্যাণমূলক বিভিন্ন কাজে বিজিবির পেশাদারিত্ব সর্বমহলে প্রশংসিত। 

বক্তব্য শেষে প্রধানমন্ত্রী প্যারেড গ্রাউন্ডে নির্মিত বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ‘প্রেরণা’ শুভ উদ্বোধন করেন। এরপর ডগ মার্চ, ট্রিক ড্রিল, বর্ণাঢ্য মোটর শোভাযাত্রা এবং বীরশ্রেষ্ঠ নুর মোহাম্মদ শেখ পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় সম্মিলিত প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। 

একই অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা ২০০৯ সালের পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের কথা স্মরণ করে বলেন, ‘এখানে এলেই মনটা ভারী হয়ে যায়। ২০০৯ সালে কেবল সরকার গঠন করি। ২৫ ফেব্রুয়ারি ঘটে এক অঘটন। এই বিদ্রোহে ৫৭ অফিসারসহ ৭৪ জন জীবন হারায়। নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। স্বজনদের সহমর্মিতা জানাচ্ছি। স্বজনহারার বেদনা কত কঠিন, সেটা বোধ হয় আমার থেকে কেউ বেশি জানে না। আমরা এই ঘটনার বিচার করেছি।’

প্যা/ভ/ম